পাকিস্তানের একেবারে উত্তরে অবস্থিত পাক অধিকৃত কাশ্মীরের গিলগিট-বাল্টিস্তান। কারাকোরাম,পশ্চিম হিমালয়,পামির ও হিন্দুকুশ পর্বতশ্রেণী দিয়ে ঘেরা ছবির মত সুন্দর এই প্রদেশের উত্তরে আছে নয়নাভিরাম হুনজা উপত্যকা। পাকিস্তানের উত্তরে রয়েছে হুনজা উপত্যকা।

এই উপত্যকার চারদিক উঁচু পাহাড়ে ঘেরা। উপত্যকায় যে গ্রামগুলো রয়েছে, তাও কেমন ছন্নছাড়া। কিন্তু এই উপত্যকার অধিবাসীরা অনন্য অন্য এক কারণে। এই উপত্যকার মানুষ কমপক্ষে ১০০ বছর বাঁচেন। কখনো কখনো ১২০ বছর পর্যন্তও বেঁচে থাকেন হুনজা উপত্যকার অধিবাসীরা। হুনজা উপত্যকার নারীদের প্রজনন ক্ষমতাও নজরে পড়ার মতো।

শোনা যায়, এই উপত্যকায় ৬০ থেকে ৯০ বছরের নারীরাও সন্তানধারণে সক্ষম। হুনজা উপত্যকার এই অধিবাসীরা বুরুশো নামে বেশি পরিচিত। বুরুশোদের দেখে মনে হয়, তারা যেন সব সময় নিজেদের যৌবনেই রয়েছেন। বয়সের ছাপ চোখেমুখে পড়ে না তাদের। সময়ের কাঁটা যেন তাদের জন্য থমকে গিয়েছে। বুরুশোদের যৌবন ধরে রাখার রহস্য লুকিয়ে রয়েছে তাদের জীবনযাপনে।

কী এই রহস্য? বিজ্ঞানীদের মতে, এলাকায় যে সব ফলমূল, সবজি পাওয়া যায়, সে সব খুবই পুষ্টিকর। এই সব খাবারেই লুকিয়ে রয়েছে বুরুশোদের দীর্ঘায়ু হওয়ার রহস্য। দুধ, দই থেকে শুরু করে নানা রকম ফল এবং শাকসব্জি খান বুরুশোরা।

পাশাপাশি বুরুশোরা এমন এলাকায় থাকেন যেখানে দূষণের পরিমাণ প্রায় শূন্য। বুরুশোদের সবাই নিজেদের চাষের জমি রয়েছে। তবে এই জমিগুলো কারও বাড়ির লাগোয়া নয়। পাহাড়ের ধাপ কেটে কেটে তৈরি জমিতে চাষ করেন বুরুশোরা।

স্বভাবত কর্মঠ এই বুরু‌শো সম্প্রদায়ের লোকজন। প্রাত্যহিক কাজকর্মের মাধ্যমেই শরীরচর্চা হয়ে যায় তাদের। কথিত আছে, বুরুশো সম্প্রদায়ের লোকেরা কখনো কোনো জটিল রোগে আক্রান্ত হন না।

কর্কট রোগ, আলসার, পেটের রোগ এমনকি অ্যাপেনডিক্সের সমস্যাতেও কেউ কোনো দিন ভোগেননি বলে দাবি স্থানীয়দের। হেনরি কোয়ান্ডা নামে এক বিজ্ঞানী হুনজা উপত্যকায় গিয়ে প্রায় ৬০ বছর ছিলেন। হুনজা উপত্যকার হিমবাহের পানি পরীক্ষা করে তিনি দাবি করেন, এই পানিই বুরুশোদের দীর্ঘায়ুর কারণ।